নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক সরকারী খাস জলমহাল “নাজিরদিঘী”কে বাজিতপুর উপজেলার প্রয়াত বেলায়েত হোসেনের পুত্র মোঃ মোশারফ হোসেন ভূয়া ও জাল কাগজপত্র তৈরী করে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি বলে দাবী করে বিগত ২৬ আগষ্ট দুপুরে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির (ডি আর ইউ) হলে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
উক্ত ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের বিরুদ্ধে শনিবার (৩০ আগষ্ট) বিকেলে নাজিরদিঘী সরকারী জলমহাল প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাজিরদীঘির লিজ গ্রহীতা মোঃ সাদিরুজ্জমান বাছির।
ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা ও পরিকল্পিত ওই সংবাদ সম্মেলনে অপ্রাসঙ্গিক ভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ শরীফুল আলমের নাম জড়িয়ে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে কাল্পনিক অভিযোগ তুলে বক্তব্য প্রদান করার প্রতিবাদে নাজিরদিঘীর লীজগ্রহীতা ও স্থানীয় নাজিরদিঘীর গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে এক প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
এ সময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাঝে উপস্থিত ছিলেন আবুবাক্কার ছিদ্দিক, নাজিরদীঘি পুকুর পাড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি হাজী আঃ ছাত্তার, হাফেজ দীন ইসলাম, মজা পুকুর সমবায় সমিতির সভাপতি নূরুল আমীন, উছমানপুর ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আসাদ মিয়া, হাজি আবুল কাশেম প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারী জলমহাল নাজিরদিঘী এর সাথে শরীফুল আলমের কোন প্রকার সংশ্লিষ্টতা নাই। তথাপিও সম্পূর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, মিথ্যা বানোয়াট ও কল্পনা প্রসূত অভিযোগ এনে ভূয়া ও জালজালিয়াতির হোতা কথিত
মোশারফ হোসেন-শিল্পপতি ও পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শরীফুল আলমের রাজনৈতিক ও সামাজিক সুনাম এবং সুখ্যাতিকে কালিমাদীপ্ত করতে জঘন্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এমন মিথ্যাচার করেছে।
মোশারফ তার মৃত পিতা মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় বিক্রি করে অনৈতিকভাবে সরকারী জলমহাল আত্মসাৎ করতে ঘৃন্য জালিয়াতির পথে বেছে নিয়েছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে মোশারফের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সেই সাথে সংবাদ সম্মেলনে শরীফুল আলমের নামে যে কুৎসা রটনা করা হয়েছে এর জন্য মোশারফ হোসেনকে ৭ দিনের মধ্যে প্রকাশ্য জনসম্মুখে ক্ষমা চাওয়ার আল্টিমেটাম/সময় দিয়ে বলা হয় অন্যতায় আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে বাধ্য হবো।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করেছেন কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলাধীন নাজিরদিঘী মৌজার নালিশী ১১১২ দাগের মোট জমি ২৪.৮৪ একর। ভূমিটি ক-নদী হিসেবে সি.এস এবং এস.এ ১নং খতিয়ান ভূক্ত। আর.এস জরীপামলে এস.এ ১১১২ দাগ ১৫৩২ দাগে রূপান্তরিত হয়ে ২৪.৮৪ একর ভূমি ১নং খাস খতিয়ানে শ্রেণী পুকুর হিসেবে আর.এস রেকর্ড লিপি হইয়া চূড়ান্ত প্রচারিত হয়। এ সময় মোশাররফের বিরুদ্ধে বাজিতপুর ১ম মুন্সেফী আদালতের ৫১/১৯৬৮ নং মিছ মোকদ্দমার আরজি এবং রায় সম্পূর্ণ জাল করার অভিযোগ করেন।
নালিশী নাজিরদীঘি সরকারি জলমহাল পুকুর হিসাবে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলা ১৩৮৪ এবং ইংরেজি ১৯৭৮ সন হইতে অদ্যাবধি বিভিন্ন সংস্থা/ব্যক্তির নিকট লীজ প্রদানক্রমে সরকারের রাজস্ব আদায় করিয়া আসিতেছে। লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয় এক সময় এই মোশাররফ হোসেন এবং হামিদ উদ্দিন আহামেদ সেলিম নামের এক ব্যক্তির সাথে যৌথভাবে এই দিঘিটি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। যা প্রমাণ করে দীঘিটা সরকারি।
সর্বোপরি সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে এবং ভূয়া ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজ তৈরী করে সরকারি জলমহাল দখলের প্রতিকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনাসহ প্রতারক মোসারফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছে।