নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জে পৈত্রিক সম্পত্তি জাল- জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ ও মানহানিকর অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, হবিগঞ্জের আজমেরীগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর গ্রামের মৃত শাহাব উদ্দিনের ছেলে লেলিন উদ্দিন ও জেরিন উদ্দিন দুই ভাই জাল-জালিয়াতি করে আমার পিতার নামে লাইমপাশা মৌজার বি.আর.এস ৮৪২ খতিয়ানের বি.আর.এস ১৫০৩ দাগের ৪ একর ভূমি ইটনা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে ৩৫৫(৯-১) ২০১৬-১৭ নং নামজারি ও জমাখারিজ করে নেয়। নামজারির বিষয়টি অবগত হলে আমি তা বাতিলের দাবীতে কিশোরগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আদালতে ৮৮(১৩)২০১৮ নং মিস আপিল মোকদ্দমা দায়ের করি। মোকদ্দমায় লেলিন ও জেরিন জবাব দাখিল করে প্রতিযোগিতা করে আসছে।
আপীল মোকদ্দমাটি প্রায় ৫ বছর চলাবস্থায় উভয়পক্ষের শুনানী শেষে ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর রায় ও আদেশ মূলে কিশোরগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), আদালত লেলিন ও জেরিন দুই ভাইয়ের জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে হাসিল করা ৩৫৫ (৯-১)২০১৬-১৭ নং জমা খারিজ বাতিল করে দেন এবং আদেশের কপি উভয়পক্ষকে অবগত করানো হয়।
অ্যাড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, মোঃ লেলিন উদ্দিন ও মোঃ জেরিন উদ্দিন বাতিল খারিজ ব্যবহার করে জাল-জালিয়াতের মাধ্যমে প্রায় আড়াই বছর পরে গোপনে সাব- রেজিষ্ট্রারের সহায়তায় গত ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি ইটনা উপজেলার কালিপুর গ্রামের নায়েম উদ্দিনের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর ও একই উপজেলার ইটনা নয়াহাটী গ্রামের মৃত রমজান আলীর মেয়ে মোছাঃ আছমা আক্তার লিপির কাছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বিক্রি করে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, জাহাঙ্গীর গং জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি ক্রয় করে এমন কথা লোকমুখে শুনে আমি সৃষ্ট দলিলের নকল উঠিয়ে গত ২০ মার্চ মোঃ লেলিন উদ্দিন ও মোঃ জেরিন উদ্দিন গংদের নামে কিশোরগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলগ্রহণকারী আদালত নং- ৪, আদালতে দঃ বিঃ ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৩৪ ধারায় সি. আর ২১২(১)২০২৫ মামলা দায়ের করি। এবং আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় সমন ইস্যু করেন এবং পরবর্তীতে ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন।
পরে মামলার আসামী মোঃ লেলিন উদ্দিন, মোঃ জেরিন উদ্দিন ও মোঃ জাহাঙ্গীর হাইকোর্ট থেকে গত ১৮ আগস্ট ৪ সপ্তাহের জন্য অন্তবর্তী জামিন নেয় এবং অন্তবর্তী জামিনে থেকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে উভয়পক্ষের শুনানী শেষে দায়রা জজ আদালত আসামীদের জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, আসামীরা জেল হাজতে থাকাকালীন হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে গত ২৫ অক্টোবর দুপুরে কতিপয় দুস্কৃতিকারী লোকজন জড়ো করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভূয়া উক্তি সংবলিত ব্যানার ব্যবহার করে ইটনা উপজেলার মৃগা ইউনিয়নের আমীরগঞ্জ বাজারে একটি মানববন্ধন করে এবং এই মানব বন্ধনে মোঃ লেলিন উদ্দিন, জাহাঙ্গীরসহ কতিপয় ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মানহানিকর বিভিন্ন মিথ্যা উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে। তিনি এসব মিথ্যা প্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং সত্য উদঘাটনের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী অ্যাড. ফরিদ উদ্দিনের বড় মো. সিরাজুল ইসলাম, অ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম শওকত, অ্যাড. শওকত কবীর খোকন, অ্যাড. মীর সাত্তার উদ্দিন, অ্যাড. মো. মোখলেছুর রহমান প্রমুখ।