কুলিয়ারচর প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার পশ্চিম অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যাওয়া কিশোরে মরদেহ ৩০ ঘন্টা পর উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
মৃত কিশোরের নাম মো. ওয়াসিম মিয়া। সে উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের নলবাইদ পূর্বপাড়া গ্রামের মো. উসমান মিয়ার পুত্র।
জানা যায়, বুধবার (১ অক্টোবর) সকাল ১০ টার দিকে নিজ বাড়ির উত্তর-পশ্চিম পাশে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে জাল দিয়ে মাছ ধরতে যায় সমবয়সী ৫ কিশোর। তাদের উদ্দেশ্য ছিল নদ সাঁতরিয়ে নদের ওপারে গিয়ে মাছ ধরবে। পরে পানিতে নেমে সাঁতরে কিছুদুর যাওয়ার পরই ওয়াসিম পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। এ সময় সঙ্গীকে বাঁচাতে চেষ্টা করে সাথে থাকা ৩ কিশোর। এক পর্যায়ে কিছু সময় চেষ্টা করে তারাও পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করে। তখন এ দৃশ্য নদে থাকা জেলেদের চোখে পরলে জেলেরা এসে ৩ কিশোরকে জীবিত উদ্ধার করলেও ওয়াসিমকে পায়নি তারা।
উদ্ধারকৃত কিশোররা হলেন, একই গ্রামের মো. আতিকুল মিয়ার পুত্র মো. ফাঈম মিয়া (১৫), মৃত বাদল মিয়ার পুত্র মো. আরিফুল (১৭), মো. রুস্তম মিয়ার পুত্র মো. সিয়াম মিয়া (২১) ও আলম মিয়ার পুত্র মো. আদনান মিয়া (১৬)। তবে বাড়ি থেকে ৫ কিশোর বের হলেও ১ কিশোর পানিতে নামেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পরে আহত ৩ কিশোরকে পার্শ্ববর্তী বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
কিশোর নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে ওইদিন কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইয়াসিন খন্দকার ও কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন পিপিএম ঘটনাস্থলে ছুটে এসে উদ্ধার তৎপরতা চালাতে ভৈরব ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ডুবুরি দল এসে বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা ৬ ঘন্টা পর্যন্ত নদের বিভিন্ন অংশে ব্যাপক খোঁজাখুজি করে উদ্ধার করতে পারেনি।
পরদিন আজ ২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত আবারও উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয় ডুবুরি দল। অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে ভৈরব নদী-বন্দর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের লিডার মো. তোফাজ্জল হোসেন উদ্ধার অভিযান আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি ঘোষণা করে বলেন, নিয়মানুযায়ী পানিতে তলিয়ে ওয়াসিমের মরদেহ পানির নিচে নেই। থাকলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে পানির উপর ভেসে উঠতো। এখন পানির নিচে না খুঁজে উপরে খোঁজতে হবে। পরে বিকেল ৫ টার দিকে যেখানে তলিয়ে গিয়েছিল এখানই কচুরিপানার ভিতর থেকে নিখোঁজ ওয়াসিমের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। তবে উদ্ধার অভিযান নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল দু-দিন কোথায় কি খোঁজলো?
অন্যদিকে ওয়াসিমের মরদেহ উদ্ধারের পর পরিবারসহ ঘটনাস্থলে ও গোটা এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মানুষ বলছে, ওয়াসিমের মা-বাবা ও পরিবার এ শোক কিভাবে বহন করবে।