ভৈরব প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের “ভৈরবে চেম্বার অব কমার্স এণ্ড ইন্ডাস্ট্রি”র বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বার্ষিক এ সভায় ব্যবসায়ীদের মিলন মেলা পরিনত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ভৈরব সরকারি কেবি পাইলট হাইস্কুল মাঠে এ সাধারণ বার্ষিক সভার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক শবনম শারমিন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও আলম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান সিআইপি মো: শরীফুল আলম।
ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এণ্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আলহাজ্ব জাহিদুল হক জাবেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভৈরব সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এএইচএম আজিমুল হক, ভৈরব উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুয়াদ রুহানী, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, ভৈরব পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি মো. মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এণ্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক আরাফাত ভূইয়া ও প্রথম আলো বন্ধুসভা ভৈরবের কার্যনির্বাহী সদস্য প্রিয়াংকা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং সভায় প্রস্তাব পাঠ করেন ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এণ্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ্ব জাহিদুল হক জাবেদ।
এ বার্ষিক সভায় আগত ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। এসময় ভৈরবের সবচেয়ে প্রধান সমস্যা চুরি ও ছিনতাইয়ের বিষয়টিও উঠে আসে তাদের বক্তব্যে।
তারা বলেন, ভৈরবের স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে ভৈরবে আসা ব্যবসায়ীরা ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে। তাই তারা ছিনতাই দমনে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশসহ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তাছাড়া বন্দরনগরী ভৈরবকে বাঁচাতে পাদুকা শিল্প, কয়লাঘাট ও লঞ্চঘাট রক্ষার দাবি জানান।
এসময় অনুষ্ঠানের উদ্বোধক উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন, ভৈরব ব্যবসায়ীদের জন্য একটি সম্ভাবনাময় জায়গা। ভৈরবের সর্বস্তরের মানুষদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বললে হবেনা। সুদূরপ্রসারী চিন্তা নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী সামনে আগাতে হবে। এসব পরিকল্পনা যেন দীর্ঘ মেয়াদি হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে সবাই মিলে সঠিকভাবে কাজ করার কথা বলেন। এসময় তিনি ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যাগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন।
এদিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ও আলম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান সিআইপি মো: শরীফুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার। বিগত দিনে ভৈরবের কোন রকম উন্নয়ন হয়নি। বরং ভৈরব শহর রক্ষা বাঁধের নামে ভৈরবপুর রক্ষা বাধ নির্মাণ করা হয়েছিল। যদি আগামীতে তার দল ক্ষমতায় যায়, তাহলে ভৈরবের জগন্নাথপুর থেকে ভৈরব বাজার হয়ে মেঘনা নদীর পাশ দিয়ে মেন্দিপুর পর্যন্ত শহর রক্ষা বাধ নির্মাণ করার আশ্বাস দেন।
তিনি আরও বলেন, ভৈরবে ছিনতাই ও মাদকের বিরুদ্ধে কোন ছাড় নাই। অপরাধীদের কোন দল নাই। তারা যে দলেরই হোকনা কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাছাড়া তারা দলীয় নেতাকর্মীদেরও হুশিয়ারি দেন ছিনতাই ও মাদক কারবারিদের যেন কেউ প্রশ্রয় না দেয়। এসময় তিনি ভৈরবের ব্যবসা বাণিজ্যকে এগিয়ে নিতে সবসময়ই ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
আলোচনা শেষে ভৈরবের সেরা তিনজন করদাতার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন প্রধান অতিথি ও উদ্বোধকসহ অন্যান্য অতিথিরা। এসময় ভৈরবের নারী উদ্যোক্তাদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
পরে ২০২৪/২৫ অর্থ বৎসরের নিরীক্ষিত অডিট রিপোর্ট আলোচনা ও অনুমোদন শেষে চেম্বারের সদস্যদের সাধারণ আলোচনা ও উন্নয়নমূলক প্রস্তাব শেষে চেম্বারের সকল সদস্যদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।