নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১৩টি দানবাক্সে এযাবৎকালের রেকর্ড ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা পাওয়া গেছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বোচ্চ টাকা পাওয়া যায় চলতি বছরের ১২ এপ্রিল ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা।
শনিবার (৩০ আগষ্ট) সকাল ৯ টা থেকে দিনভর গণনা শেষে জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, এ নিয়ে পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়াল ১০৩ কোটি টাকা।
প্রতি চার মাস পর পর মসজিদের দানবাক্স খোলা ও টাকা গণনা করা হয়। সেই মোতাবেক শনিবার সকাল ৯ টার দিকে ১৩টি দানবাক্স খোলা হয়। এসব দানবাক্সে ৩২ বস্তা টাকা পাওয়া যায়।
নগদ টাকার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনা-রুপার গয়নাও ছিল। তবে এসব পরে গণনা করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
এবার টাকা গণনার কাজে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষকে যুক্ত করা হয়। ৪৯৪ জনের জনের একটি দল গণনার কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।
পাগলা মসজিদ মাদরাসা ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার ২৮৬ জন ছাত্র এবং রূপালী ব্যাংকের ৮০ জন কর্মকর্তা -কর্মচারী টাকা ভাজ ও গণনার কাজ করেন।
সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসারের ৭৫ জন সদস্য ছাড়াও মসজিদ- মাদরাসার ৩৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সহায়তা করেন।টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সন্ধ্যা ৬টার দিকে গণনা শেষ হয় ।
ফৌজিয়া খান জানান, দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদ এবং এর অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করা হয়। এ ছাড়া দানের টাকায় জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরিব ছাত্র ও দুস্থদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজের তিনতলা পাগলা মসজিদটি কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
কথিত আছে, প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বে বাংলার বারো ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী বারোজন জমিদারদের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক একজন ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।